সমঝোতার চেষ্টায় ফিলিপাইনে প্রতিনিধি দল
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সমঝোতার উদ্যোগের অংশ হিসাবে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল এখন ফিলিপাইনে অবস্থান করছে। তারা ফিলিপাইনের মানি লন্ডারিং কর্তৃপক্ষ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করছে। নিউইয়র্কের আদালতের নির্দেশে বাংলাদেশ ফিলিপাইনে গিয়ে এ বিষয়ে সমঝোতার চেষ্টা করছে।
সূত্র জানায়, ১৩ জানুয়ারি নিউইয়র্কের আদালত রিজার্ভ চুরির মামলা বাতিল করার জন্য ফিলিপাইনের আবেদন খারিজ করে দেয়। একই সঙ্গে আদালত দুপক্ষকে সমঝোতার চেষ্টা করতে নির্দেশ দেন। সে নির্দেশের আলোকেই বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ফিলিপাইনে গেছে ২৮ জানুয়ারি। ২৭ ফেব্রুয়ারি তাদের ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে। আদালতের রায় অনুযায়ী দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা না হলে মামলা চলবে।
প্রতিনিধি দলে রয়েছেন বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, বিএফআইইউর ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের কর্মকর্তারা। তারা ফিলিপাইনের অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল, আইন বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবেন।
ঢাকায় প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যে ফিলিপাইনে কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছে। ওইসব বৈঠকে জানানো হয়েছে, ফিলিপাইনের আসামিদের পক্ষে কোনো সমঝোতা করা হবে না। তারা মামলা চালাবে। সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিউইয়র্ক শাখায় রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে সুইফট সিস্টেমস হ্যাক করে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়ে যায়। এর মধ্যে ২ কোটি যায় শ্রীলংকায়। সে অর্থ ওই সময়ে ফেরত পাওয়া গেছে। বাকি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকিং করপোরেশনে। সেখান থেকে ওই অর্থ চলে যায় ক্যাসিনোতে। এর মধ্যে দেড় কোটি ডলার ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। বাকি ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার এখনও ফেরত আনা সম্ভব হয়নি। ওই অর্থ উদ্ধার করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটান সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে মামলা করে বাংলাদেশ। মামলায় ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংক, ডলার পেসোতে রূপান্তর করতে ব্যবহার করা ক্যাসিনোর মালিক কিম অংসহ ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বিবাদী করা হয়। ২০২০ সালের মার্চে ম্যানহাটন সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট জানিয়ে দেন, মামলাটি তাদের এখতিয়ারভুক্ত নয়। এরপর বাংলাদেশ ২০২০ সালের ২৭ মে নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট কোর্টে মামলা করে। সেটি এখন বিচারাধীন রয়েছে।