নিজস্ব প্রতিবেদক: সূচক কমার মধ্য দিয়ে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস গতকাল রোববারে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে এদিন দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল আইটি খাতে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপে পতন হয়েছে। ফলে খাতটি লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও শেয়ারদর কমেছে। গত সপ্তাহে খাতটি শেয়ারদর বৃদ্ধির দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে ছিল, যে কারণে সপ্তাহের প্রথম দিনই মুনাফা সংগ্রহে শেয়ার বিক্রির চাপ ছিল বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া এদিন বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি ছিল ভ্রমণ খাতের শেয়ারে। এতে খাতটির শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এরপর দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিমা খাতের শেয়ার। ব্যাংক খাত শেয়ারদর বৃদ্ধির তৃতীয় স্থানে ছিল। এদিন কাগজ ও মুদ্রণ খাতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, ভ্রমণ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৫ দশমিক ১০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট চারটি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে দুটির দর বেড়েছে এবং দুটি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। এর পরের অবস্থানে থাকা বিমা খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ২ দশমিক ৩০ শতাংশ। এদিন বিমা খাতে মোট ৫৬টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ৩৬টির দর বেড়েছে এবং ১৭টির কমেছে। তৃতীয় স্থানে থাকা ব্যাংক খাতের দর বেড়েছে শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ। ব্যাংক খাতে লেনদেন হওয়া ৩৪টি কোম্পানির মধ্যে দুটির দর বেড়েছে এবং একটি বাদে বাকি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। এছাড়া টেলিকমিউনিকেশন, মিউচুয়াল ফান্ড, আর্থিক, বস্ত্র ও প্রকৌশলী খাতে শেয়ারদরের বৃদ্ধি বা কমার ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম থাকায় কাগজ খাতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে ২ দশমিক ১০ শতাংশ। এর পরের স্থানে থাকা সেবা ও আবাসন খাতে ১ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। ১ দশমিক ৭০ শতাংশ শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল সিরামিক খাত। এদিন লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইটি খাতের শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ৩০ শতাংশ।
অপরদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিমা খাতে। খাতটিতে গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৮ দশমিক ৮০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইটি খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৮ দশমিক ৪০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা বিবিধ খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৮ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৮ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন হওয়া ওষুধ ও রসায়ন খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইতে গতকাল ৬৯২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার ও সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবস থেকে ১০২ কোটি আট লাখ টাকা বা ১৭ শতাংশ বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫৯০ কোটি ৬৮ লাখ টাকার।
এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬২৫৬ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ্ সূচক ৭ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৩৬১ পয়েন্টে এবং ২২০৪ পয়েন্টে। ডিএসইতে ৩৬৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ৫৩টির বা ১৪ দশমিক ৫৬ শতাংশের, শেয়ারদর কমেছে ১২৬টির বা ৩৪ দশমিক ৬২ শতাংশের এবং ১৮৫টির বা ৫০ দশমিক ৮২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত রয়েছে।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮৪৫৪ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৯৭টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৫টির দর বেড়েছে, কমেছে ৬৪টির এবং ৮৮টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে আট কোটি তিন লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।