বিনিয়োগ আকর্ষণ, ব্যবসার সম্ভাবনা তুলে ধরা ও সমস্যা উত্তরণে করণীয় খুঁজে বের করতে আগামী ১১ থেকে ১৩ মার্চ ঢাকায় ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ করতে যাচ্ছে ব্যাবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
এ আয়োজনে দেশের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারী, উদ্যোক্তা ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। এতে ‘বেস্ট অব বাংলাদেশ এক্সপো ২০২৩’ ও ‘বাংলাদেশ বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ সম্মাননাও দেয়া হবে।
গতকাল শনিবার রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি জানান, এফবিসিসিআই প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপনে এই সামিটের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আয়োজনটি হবে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে।
দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে আরও ত্বরান্বিত করতে এই সামিট বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, ‘সামিট আয়োজনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ।’
বিশ্বের ১২ থেকে ১৫টি দেশের মন্ত্রী ও কয়েকটি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা এতে অংশ নেবেন বলে আশা করছে এফবিসিসিআই। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ট্রেড কমিশনারকেও আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
সামিটের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে ‘সিএনএন এক্সপেরিয়েন্স’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সামিটের এক আলোচনায় যুক্ত হবেন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনের বিজনেস এডিটর-অ্যাট-লার্জ রিচার্ড কোয়েস্ট।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এ আয়োজনে সহযোগিতা করবে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে বৈশ্বিক ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী, উদ্ভাবক, নীতিনির্ধারক, বাজার বিশ্লেষক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে তুলে ধরতে এ আয়োজন অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করছেন এফবিসিসিআই প্রধান।
সামিটের তিনটি প্ল্যানারি সেশন, ১৩টি প্যারালাল সেশন, উš§ুক্ত আলোচনা, বিটুবি মিটিং ও নেটওয়ার্কিং সেশনে দেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের সম্ভাবনা, বাধা এবং উত্তরণের উপায় খুঁজে বের করে আলোচনা করবেন ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, বিশ্লেষক ও সরকারি নীতিনির্ধারকরা।
সামিট আয়োজনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে এক বিজ্ঞপ্তিতে এফবিসিসিআই বলছে, ‘সরকার সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। সুতরাং এখনই সময় বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করার। এখনই সময় আমাদের ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির পথে যাত্রাকে ত্বরান্বিত করা।
‘২০০৮ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি ছিল ৯০ বিলিয়ন ডলারের। সেটি এখন ৪৭০ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। আগামীতে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির পথে যাচ্ছে বাংলাদেশ।’
বাংলাদেশ এখন বিদেশি বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত বলে মন্তব্য করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশে যেসব বিদেশি কোম্পানি কাজ করছে, তারা ব্যবসায় সাফল্য অর্জন করেছে। তাছাড়া আমাদের দেশীয় বাজার অনেক বড়। সময় এসেছে এখন বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে আসার।’
সামিটে বাংলাদেশে উৎপাদিত সেরা পণ্যগুলোকে তুলে ধরা হবে ‘বেস্ট অব বাংলাদেশ এক্সপো, ২০২৩’-এর মাধ্যমে ।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে দেশের সম্ভাবনাময় খাতের মধ্যে টেক্সটাইল, কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাবার, চামড়া, সিরামিক, পাট, হস্তশিল্পসহ বিভিন্ন খাত ও পরিষেবা দেয়ার সুযোগ তুলে ধরা হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
দেশে ব্যবসা ও অর্থনৈতিক খাত বিকাশে ভূমিকা রাখায় ‘বাংলাদেশ বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ দিতে অর্থনীতিবিদ, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে বিশেষ জুরি বোর্ড গঠন করেছে এফবিসিসিআই।
সামিটে অংশ নিতে আগ্রহীদের ওয়েবসাইটে (https://bdbusinesssummit.com/) নিবন্ধন করতে হবে।
এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহসভাপতি এমএ মোমেন, আমিন হেলালী, সালাউদ্দিন আলমগীর, হাবীব উল্লাহ ডন, পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের প্রধান কারিগরি উপদেষ্টা এম মাশরুর রিয়াজও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।