আইপিওর যাচাই-বাছাইয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের আরও ভূমিকা থাকা প্রয়োজন

আইপিওর যাচাই-বাছাইয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের আরও ভূমিকা থাকা প্রয়োজন

বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে নতুন আসা কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করে। তবে এসব কোম্পানির আইপিওর যাচাই-বাছাইয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের আরও ভূমিকা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত ‘সিএমজিএফ টক’ অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ কথা বলেন।

রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিএমজেএফের নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি জিয়াউর রহমান এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু আলী। এ সময় সংগঠনটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ডিএসইর এমডি বলেন, আইপিওর যাচাই-বাছাইয়ে ব্যাপারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আলাদা আইন রয়েছে। কোথাও স্টক এক্সচেঞ্জ অনুমোদন দেয় আবার কোথাও রেগুলেটর অনুমোদন দেয়। আমাদের দেশে আইপিওসহ সব ধরনের পাবলিক অফারের অনুমোদন দেয় বিএসইসি। এক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জের ভূমিকা থাকলেও তা খুব সীমিত। তবে একসময় আমাদের স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে আইপিও আবেদন যাচাই-বাছাই ও মতামত দেওয়ার সুযোগ ছিল। আবারও এই ধরনের সুযোগ দেওয়া হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার উপর চাপ কমে যাবে।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজার মূলত তথ্যের উপর ভিত্তি করে দাঁড়ানো। ভুল তথ্যে একটা বাজারে তাসের ঘরের মতো ধসে যেতে পারে। আইপিওতে আসা কোম্পানিগুলোর উচিত সঠিক তথ্য দেওয়া। পাশাপাশি তাদের কর্মকাণ্ডে সততা থাকা উচিত।

তিনি আরও বলেন, আইপিও মার্কেট এবং সেকেন্ডারি মার্কেটে অবশ্যই সুশাসন থাকা উচিত। সেকেন্ডারি মার্কেট ট্রেডিং সিস্টেমের উপর ভিত্তি করে চলে। এখানে অবশ্যই ফেয়ার ট্রেড থাকতে হবে এবং কোম্পানিগুলোর সঠিক শেয়ারদর থাকতে হবে।

ফ্লোর প্রাইস নিয়ে ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জ প্রাইস ডিসকভারের জায়গা। রেগুলেটর বা স্টক এক্সচেঞ্জ প্রাইস ফিক্সড করতে পারে না। এটা বিশ্বের কোথাও নেই। ফ্লোর প্রাইসের কারণে বাজারের ট্রেডিং ভলিউমও কম হচ্ছে। পুঁজিবাজারের আস্থার উন্নয়নে ফ্লোর প্রাইস কোনো স্থায়ী কোনো সমাধান নয়।

তিনি জানান, পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস আনার আগে তার মতামত নিলে সেখানে ‘না’ বলতেন।

ডিএসইর একই অডিটর দিয়ে ৩৬ বছর ধরে নিরীক্ষা করানোর বিষয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর সকল তালিকাভুক্ত কোম্পানি অডিটের ক্ষেত্রে রোটেশনে জোর দেয়। কারণ রোটেশন না করলে অডিটর নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে না। দীর্ঘদিন ধরে একসাথে কাজ করতে গিয়ে পরস্পরের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়। এতে অডিটর প্রভাবিত হতে পারেন। কারণ অডিটিং হচ্ছে সুশাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক নির্বাহী পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। অনুষ্ঠানে তিনি ডিএসইর বর্তমান অবস্থার নানাদিক এবং এর উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

Leave a Reply