বিমানের পাওনা ১৪ কোটি টাকা, অনেক এজেন্টের ‘অস্তিত্ব নেই’

বিমানের পাওনা ১৪ কোটি টাকা, অনেক এজেন্টের ‘অস্তিত্ব নেই’

ট্রাভেল এজেন্ট ও কার্গো এজেন্টদের কাছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাওনা প্রায় ১৪ কোটি টাকা, কিন্তু অনেক ট্রাভেল এজেন্টের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।

জাতীয় সংসদের অধিবেশনে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

সংসদ সদস্য হাবিবর মো. রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাওনা টাকা পুনরুদ্ধারের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছু এজেন্ট দেউলিয়া হয়ো যাওয়া এবং লিকুইডেশন প্রক্রিয়ায় থাকায় সে উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।

‘অনেক এজেন্টের দেয়া ঠিকানায় যোগাযোগ করে কোনো অফিস/অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। কিছু এজেন্টদের বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্টের কাছে বিমানের পাওনা (খেলাপি) ১২ কোটি ৩০ লাখ ৯২ হাজার ২২৩ টাকা। আর কার্গো এজেন্টের কাছে পাওনা এক কোটি ৬৮ লাখ ৪৭ হাজার ৯৮০ টাকা।

এম আব্দুল লতিফের লিখিত প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, দেশে বায়োমাস ও পৌরবর্জ্য পোড়ানো, ইটভাটার সৃষ্ট দূষণ, অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণ কার্যক্রম থেকে সৃষ্ট ধুলাবালি, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, শিল্পকারখানার দূষণ বায়ুদূষণের মূল কারণ।

‘এছাড়া আন্তঃসীমান্ত দূষণ দেশের বায়ু দূষণের মাত্রাকে অনেকাংশে বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাই দূষণ নিয়ন্ত্রণে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রচলন অত্যন্ত জরুরি।’

নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে বৃক্ষ আচ্ছাদিত ভ‚মির পরিমাণ দেশের মোট আয়তনের ২২.৩৭ শতাংশ এবং বন আচ্ছাদিত ভ‚মির পরিমাণ দেশের মোট আয়তনের ১৪.০১ শতাংশ।

‘বন অধিদপ্তর দেশের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা ও পরিবেশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প ও রাজস্ব বাজেটের আওতায় বিভিন্ন ধরনের বনায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।’

হাজি মো. সেলিমের প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবরবতন মন্ত্রী জানান, দেশে সংরক্ষিত বনভ‚মির পরিমাণ ৯১ হাজার ৩৮১ দশমিক ৮৯ একর। সংরক্ষিত বনভ‚মি চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নীলফামারী, নওগাঁ ও নোয়াখালী জেলায় অবস্থিত।

মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে শাহাব উদ্দিন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিলে বরাদ্দ অর্থ ও তহবিলের সুদ থেকে তিন হাজার ৬৯০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮৬১টি সরকারি ও ৬১টি বেসরকারিসহ ৯২২টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে ৬০১টি সমাপ্ত হয়েছে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও রিজার্ভ পতন থামাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ যথাযথ: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী 

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা স্থিতিশীল করতে বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা যথাযথ বলে মনে করছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শামসুল আলম বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা আমাদের জানানো হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তাতে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। যদিও কিছুটা সময় লাগবে। জানুয়ারির মধ্যে ৮ শতাংশে নেমে আসবে মনে করছি। অর্থনীতি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ব্যাংক দক্ষ। যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েই বাংলাদেশ ব্যাংক এগোচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রিজার্ভ বাড়ানো এবং বিনিময় হার স্থিতিশীল করা পরামর্শ দিয়েছে। তারা  রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় মনোযোগী বলে জানিয়েছে। সবমিলিয়ে আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে। অর্থনীতি ব্যবস্থায় ভালো ভ‚মিকা রাখবে বলে মনে করি।

ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও রিজার্ভের পতন ঠেকাতে দিশাহারা সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক। নানা পদক্ষেপ নিয়ন্ত্রণে আসছে না। তাই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও রিজার্ভের পতন ঠেকাতে কী করণীয়; তা জানতে সরকারের পরামর্শে অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বসা শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার আলোচনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে যান পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম ও প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা মশিউর রহমান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চার ডেপুটি গভর্নরসহ অন্য কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে অর্থনীতির নানা সূচক, নীতি উদ্যোগ ও তার প্রভাব নিয়ে একটি উপস্থাপনা দেন প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান। সংকট কাটাতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, উপস্থাপনায় সেগুলো তুলে ধরা হয়।

এর আগে সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ ও নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান ও গবেষণা পরিচালক সায়মা হক বিদিশা, বাংলাদেশ ব্যাংকে যান বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা সংস্থার (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরী ও বিআইডিএ’র বর্তমান পরিচালক বিনায়ক সেনের সঙ্গে একই বিষয়ে বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

Leave a Reply