নিজস্ব প্রতিবেদক: আমরা আট লেন করি, ছয় লেন করি, যতই উড়াল সড়ক, যতই আমরা কাজ করিÑশৃঙ্খলা না এলে সব উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে, যদি শৃঙ্খলার এত ঘাটতি থাকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে যে উন্নয়ন, যে অর্জন, তা বিশ্বে বিস্ময়কর। বাংলাদেশ শুধু সড়ক সেতুতে কী বিস্ময়কর উন্নয়ন করেছে। উন্নয়ন সব জায়গায় হয়েছে।
গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও সড়ক ভবনে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ পরিচালনা পরিষদের ১৬তম সভা শেষে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্থানীয় সরকার, শিক্ষা, বিদ্যুৎ সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন। এরপরও আমরা যখন রাস্তায় বের হই, সেখানে শৃঙ্খলার অভাব। সড়কে শৃঙ্খলার অভাব, এইগুলোতেই আমাদের সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এত উন্নত জাতি, যেটা সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তারপরও কেন সচেতন হব না। শৃঙ্খলার ব্যাপারে আমরা সজাগ হবো।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ঢাকা শহরে সড়ক পরিবহন-সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের করণীয় বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রীকে সভাপতি করে সড়ক পরিবহন, ঢাকা দক্ষিণ, উত্তর সিটি করপোরেশন, রাজউক, পানি উন্নয়ন বোর্ড, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, ডিএমপি কমিশনার ও ডিটিসিএর সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটা মূলত সমন্বয়ের জন্য। বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সমন্বয়হীনতা লক্ষ করা যাচ্ছে। আমাকে প্রপোজাল দিয়েছেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এই কমিটি করেছি। কমিটি করেছি আরও ভালোভাবে সমন্বয় করার জন্য।
তিনি আরও বলেন, বর্ষা মৌসুমে খোঁড়াখুঁড়ি দেখে থাকি। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে নির্মাণকাজ শেষ করতে হবে। রাস্তা কাটাকাটি করতে হলে সিটি করপোরেশনকে জানাতে হবে। যার যে প্রকল্প আছে, সেটাও সিটি করপোরেশনকে জানাতে হবে। ইটের পরিবর্তে ব্লক ব্যবহারের লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ব্লক পরিবেশবান্ধব, সে কারণে এই ব্যবস্থাটা জরুরি হয়ে পড়েছে।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, চারটি বাস টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যাগ নেয়া হয়েছে। নিমতলী বস্তির জায়গা হস্তান্তরের বিষয়টি সাব-কমিটির আলোচ্যসূচির মধ্যে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশন এবং এর আশপাশের কয়েক জেলা প্রসারিত করার বিষয়ে ভিন্ন মত আসে এখানে। সে কারণে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির কবে সম্মেলন হয়েছে ফখরুল সাহেবের কি মনে আছে? আন্দোলনেও ব্যর্থ, নির্বাচনেও ব্যর্থ। বিএনপির নেতাদের টপ টু বটম অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। সেটা সময়ের ব্যাপার কি না, আমরা দেখতে চাই।
তিনি বলেন, তারা নিজের ঘরে চর্চা করে না। আওয়ামী লীগে প্রতি তিন বছর পরপর সম্মেলন হয়, প্রত্যেক মাসে আমাদের সম্পাদকমণ্ডলীর মিটিং হয়। প্রত্যেক ছয় মাসে আমাদের জেলাগুলোকে নিয়ে বর্ধিত সভা হয়। এক বছরে আমাদের জাতীয় কমিটির সভা হয়। আমি পিটার হাসকে (যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত) অনুরোধ করব, আপনারা ডেমোক্রেসির কথার বলতে এলে যারা ডেমোক্রেসিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, সেই বিএনপিকে জিজ্ঞেস করুনÑতাদের ঘরে ডেমোক্রেসি নেই কেন? সেটা আগে জিজ্ঞেস করুন। কেন তারা সম্মেলন করেন না? কয় বছর আগে সম্মেলন করেছেন?
ওবায়দুল কাদের বলেন, আসলে গরিব মানুষ কষ্টে আছে, স্বল্প আয়ের মানুষ কষ্টে আছে। এটা আমাদের সরকারপ্রধান নিজে স্বীকার করেছেন। বিশ্ব পরিস্থিতির জন্য শাস্তি পাচ্ছি আমরা। আমাদের কোনো দোষ নেই।
এ সময় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস উপস্থিত ছিলেন।